শিরোনাম

সোলার ফেন্সিংয়ে সুবিধা পাচ্ছেন কাপ্তাইয়ের মানুষ

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৪, ২০২২, ০৩:৫৩ রাত
আপডেট: অক্টোবর ২৪, ২০২২, ০৩:৫৩ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

কাপ্তাই প্রতিনিধি।
 
লোকালয়ে বন্য হাতির প্রবেশ ঠেকাতে রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে জাতীয় উদ্যান ও এর পাশে ‘সোলার ফেন্সিং’ স্থাপন করেছে বন বিভাগ। দুমাস আগে ফেন্স বসানোর পর থেকে কোনো বন্য হাতি লোকালয়ে প্রবেশ না করায় স্বস্তি ফিরেছে জনমনে। তবে হাতির চলাচল ও খাদ্য গ্রহণের পথে এটা কোনো বাধা সৃষ্টি করেনি বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।

কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানের প্রশান্তি পার্ক থেকে নেভি ক্যাম্পে যেতে চোখে পড়বে সড়কের এক পাশে আট ফুট উচ্চতার সিলভার রঙের পিলার। যা ১০ ফুট পরপর সারিবদ্ধভাবে পুঁতে রাখা হয়েছে। সেগুলো দিয়ে টেনে নেয়া হয়েছে তিনটি সরু তার। প্রতিটি পিলারের মাথায় লাল রঙের বোর্ড সাঁটা আছে। যেখানে লেখা আছে সতর্কীকরণ বার্তা। এই লাইন কোথাও লোকালয়ের পাশ দিয়ে কোথাও-বা জঙ্গলের ভেতর দিয়ে চলে গেছে প্রায় আট কিলোমিটার পথ। এগুলোই হচ্ছে সোলার ফেন্সিং।


লোকালয়ে বন্য হাতির আক্রমণ রোধ এবং মানুষ ও হাতির দ্বন্দ্ব নিরসনে বন বিভাগ এগুলো স্থাপন করেছে। সোলার সিস্টেমে চলার করণে বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় না। তা ছাড়া এর শক ক্ষমতাও খুব কম। বন বিভাগের মতে হাতি খুবই সংবেদনশীল প্রাণী হওয়ায় এই সামান্য শকেই তাদের গতিপথ পরিবর্তন করে নেয়। গত দুই মাস আগে ফেন্সিং স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে লোকালয়ে প্রবেশ করেনি কোনো হাতি। এতে স্বস্তি ফিরেছে জনমনে। স্থানীয় বাসিন্দা শরিফ মিয়া বলেন, ‘আমরা সড়কে চলাচল করি। আগে প্রায়ই হাতির সামনে পড়তাম, এই ফেন্সিং বসানোর পর কোনো হাতি আর লোকালয়ে আসেনি। এতে আমরা বেশ স্বস্তিতে আছি।’

চা দোকানি রাহেলা বেগম বলেন, ‘আগে আমাদের দোকানের সামনে পর্যন্ত হাতি চলে আসত, পাশে আমাদের বাসা, সেখানকার গাছপালার ক্ষতি করত। খুব ভয়ে থাকতাম কখন বসতঘরে আক্রমণ করে। এখন আর সেই ভয়টা নেই।’

অটোচালক খালেক মিয়া বলেন, আগে প্রশান্ত পার্ক থেকে নেভি ক্যাম্পে যেতে কতবার যে বন্য হাতির সামনে পড়েছি তার ঠিক নেই। এই সড়কে এলেই প্রচণ্ড ভয়ে থাকতাম। অনেক লোক বন্য হাতির আক্রমণে মারাও গেছে। আগেই যদি এই সিস্টেমটি চালু করত, তাহলে এত মানুষ মরত না। গত দুই মাসে এই সড়কে কোনো হাতি আসেনি। নির্ভয়ে গাড়ি চালাচ্ছি।’


কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুনতাসির জাহান বলেন, ‘কাপ্তাইবাসী এই প্রকল্পের সুফল পাচ্ছে এটা বলতেই পারি। কারণ, গত দুমাসে লোকালয়ে হাতি প্রবেশ করেনি। হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবরও পাওয়া যায়নি। এতে বলতে পারি, সোলার ফেন্সিংয়ের মাধ্যমে লোকালয়কে নিরাপদ করা সম্ভব হয়েছে।’

কাপ্তাই রেঞ্জ কর্মকর্তা খন্দকার মাহমুদুল হক মুরাদ বলেন, ‘এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় আমরা হাতির মূল করিডোরে কোনো বাধা সৃষ্টি করিনি। হাতির বিচরণক্ষেত্র উন্মুক্তই রয়েছে। হাতি স্বাধীনভাবে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে বা জলাশয়ে যেতে পারছে। মোটকথা আমরা শুধু লোকালয়ে যাতে হাতি না আসে সেই ব্যবস্থা করেছি।’

বন বিভাগের তথ্যমতে কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানে ছোট-বড় মোট ৪৬টি বন্য হাতি রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, নিউজ টিপিবি এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়