মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি।
রঙিন কাগজের ফুলে সাজানো হয়েছে রুমের ওয়াল। নববধূ সাজে সেজেছেন দুই কনে। পাশে আছেন তাদের দুই বর। এসেছেন অতিথিরাও।
এমন ঘটা করেই বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের এতিম ও প্রতিবন্ধী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শাকিলা ও নয়ন তারার বিয়ে হয়েছে। তাদের বিয়ে দিতে পেরে খুশি কর্তৃপক্ষও।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শাকিলা ও নয়ন তারা বাল্য কালেই হারিয়ে যান। নেই তাদের বাবা-মা কিংবা কোনো পরিচয়। বড় হয়েছে সরকারি শিশু পরিবারে। সেখানে তারা বড় হয়। যখন ১৮ বছর বয়স হয়, তখন তাদের নিয়ে আসা হয় মৌলভীবাজার এতিম ও প্রতিবন্ধীদের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে।
সম্প্রতি সিলেটের ওসমানীনগরের বাসিন্দা আল আমিনের সঙ্গে শাকিলা ইসলাম ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কনকপুরের বাসিন্দা সাব্বিরের সঙ্গে নয়ন তারার বিয়ে ঠিক হয়। দুই বর পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান। তিনি অভিভাবক হয়ে বরের হাতে তুলে দেন তাদের। দুই কনের বিয়েতে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা করে উপহার দেওয়া হয়।
এদিকে শাকিলা ও নয়ন তারার বিয়ে দেখে আনন্দিত ওই কেন্দ্রে থাকা আরও ৩০-৪০ মেয়ে। তারাও দুই সহনিবাসীর জন্য শুভ কামনা জানান। রুজিনা বেগম বলেন, তাদের দুজনের বিয়ে হচ্ছে দেখে আমরা আনন্দিত। আশা করছি আমরা এখানে যারা আছি, তারা এভাবে নতুন জীবন ফিরে পাবো। আমাদের পরিবার হারিয়েছি কিন্তু এখান থেকে আবার আমরা নতুন জীবনে ফিরবো।
এতিম ও প্রতিবন্ধী মেয়েদের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের এ কে এম মিজানুর রহমান বলেন, যখন বিয়ের প্রস্তাব আসে, তখন পাত্র পক্ষ ও পাত্রী উভয়ের মতামত আমরা নিয়েছি। শাকিলা সেলাই শিখেছে আর নয়ন তারা সেলাই ও ড্রাইভিং জানে। তারা যেমন সুন্দর তেমনি দক্ষও। সুন্দরভাবে তাদের বিয়ে দিতে পেরে আমি খুশি।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা অফিস এ বিয়ের আয়োজন করেছে। বুধবার তাদের গায়ে হলুদ হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিয়ে হলো। তাদের আগামীর জীবন ফুলে ফলে পল্লবিত হোক, আমরা সেই কামনা করি। প্রধানমন্ত্রী তাদের প্রতি শুভ কামনা জানিয়ে এক লাখ টাকা করে দুই জনকে দুই লাখ টাকা উপহার দিয়েছেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, নিউজ টিপিবি এর দায়ভার নেবে না।